আজ দুপুরের নামাজের পর এক ভাই আমাকে বলেন, “ভাই আপনি যেখানে হাত বাধেন তা হয়না। আমি নাভীর নিচে বাধার হাদিস পেয়েছি।” আমি তাকে কিছু না বলে, এ বিষয়টি নিয়ে আরো ঘবেষোণা করি। আর তা আপনাদের সাথে তুলে ধরলাম। এ বিষয়টি সবার জানা দরকার।
#বুকের_উপর_হাত_বাঁধার_ছহীহ_হাদীছ_সমূহ : রাসূল (ছাঃ) সর্বদা বুকের উপর হাত বেঁধে ছালাত আদায় করতেন। উক্ত মর্মে একাধিক ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে কয়েকটি পেশ করা হল : (1) عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُوْنَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ الْيَدَ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِي الصَّلَاةِ قَالَ أَبُوْ حَازِمٍ لَا أَعْلَمُهُ إِلَّا يَنْمِىْ ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ . (১) সাহল বিন সা‘দ (রাঃ) বলেন, লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হত, মুছল্লী যেন ছালাতের মধ্যে তার ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখে। আবু হাযেম বলেন, এটা রাসূল (ছাঃ)-এর দিকেই ইঙ্গিত করা হত বলে আমি জানি।[1] ইমাম বুখারী (রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, بَابُ وَضْعِ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى ‘ছালাতের মধ্যে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা অনুচ্ছেদ’।[2] উল্লেখ্য যে, ইমাম নববী (রহঃ) নিম্নোক্ত মর্মে অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন- ‘তাকবীরে তাহরীমার পর ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে বুকের নীচে নাভীর উপরে রাখা’।[3] অথচ হাদীছে ‘বুকের নীচে নাভীর উপরে’ কথাটুকু নেই। মূলতঃ পুরো ডান হাতের উপর বাম হাত রাখলে বুকের উপরই চলে যায়। যেমন উক্ত হাদীছ উল্লেখ করে শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, وَمِثْلُهُ حَدِيْثُ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ كَانَ يَضَعُ الْيُمْنىَ عَلَى ظَهْرِ كَفِّهِ الْيُسْرَى وَالرُّسْغِ وَ السَّاعِدِ رَوَاهُ أَبُوْدَاؤُدَ وَ النَّسَائِىُّ بِسَنَدِ صَحِيْحٍ وَ هَذِهِ الْكَيْفِيّةُ نَسْتَلْزِمُ أَنْ يَّكُوْنَ الْوَضْعُ عَلَى الصَّدْرِ إِذَا أَنْتَ تَأَمَّلْتَ ذَلِكَ وَعَمِلْتَ بِهَا فَجَرِّبْ إِنْ شِئْتَ وَ مِمَّا يَنْبَغِىْ أَنْ يَّعْلَمَ أَنَّهُ لَمْ يَصِحُّ عَنْهُ الْوَضْعُ عَلَى غَيْرِ الصَّدْرِ كَحَدِيْثِ وَ السُّنَّةُ وَضْعُ الْكَفِّ فِى الصَّلاَةِ تَحْتَ السُّرَّةِ. ‘অনুরূপ ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) ডান হাত বাম হাতের পাতা, হাত ও বাহুর উপর রাখতেন। যা ছহীহ সনদে আবুদাঊদ ও নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। এই পদ্ধতিই আমাদের জন্য অপরিহার্য করে যে হাত রাখতে হবে বুকের উপর। যদি আপনি এটা বুঝেন এবং এর প্রতি আমল করেন। অতএব আপনি চাইলে যাচাই করতে পারেন। আর এ সম্পর্কে যা জানা উচিৎ তা হল, বুকের উপর ছাড়া অন্যত্র হাত বাঁধার বিষয়টি রাসূল (ছাঃ) থেকে ছহীহ হিসাবে সাব্যস্ত হয়নি। যেমন একটি হাদীছ, ‘সুন্নাত হল ছালাতের মধ্যে নাভীর নীচে হাতের পাতা রাখা’ (এই বর্ণনা সঠিক নয়)।[4] বিশেষ জ্ঞাতব্য : সুধী পাঠক! ছহীহ বুখারীতে বর্ণিত উক্ত হাদীছের অনুবাদ করতে গিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন অনুবাদে ‘ডান হাত বাম হাতের কবজির উপরে’ মর্মে অনুবাদ করা হয়েছে।[5] আধুনিক প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত বুখারীতেও একই অনুবাদ করা হয়েছে।[6] অথচ ইসলমিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একই খন্ডের মধ্যে অন্যত্র এর অর্থ করা হয়েছে ‘বাহু’।[7] কিন্তু ‘বাহু’ আর ‘কব্জি’ কি এক বস্ত্ত? সব হাদীছ গ্রন্থে ‘যিরা’ অর্থ ‘বাহু’ করা হয়েছে। যেমন রাসূল (ছাঃ) ওযূ করার সময় মুখমন্ডল ধৌত করার পর বাহুর উপর পানি ঢালতেন।[8] এছাড়া আরবী কোন অভিধানে ‘যিরা’ শব্দের অর্থ ‘কব্জি’ করা হয়নি। অতএব কোন সন্দেহ নেই যে, নাভীর নীচে হাত বাঁধার ত্রুটিপূর্ণ আমলকে প্রমাণ করার জন্যই উক্ত কারচুপি করা হয়েছে। অথচ অন্যত্র ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) তাঁর ডান হাতটি বাম হাতের পাতা, কব্জি ও বাহুর উপর রাখতেন, যা পূর্বে আলবানীর আলোচনায় পেশ করা হয়েছে। (2) عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ لَأَنْظُرَنَّ إِلَى صَلاَةِ رَسُوْلِ اللهِ كَيْفَ يُصَلِّى فَنَظَرْتُ إِلَيْهِ فَقَامَ فَكَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى حَاذَتَا بِأُذُنَيْهِ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى كَفِّهِ الْيُسْرَى وَالرُّسْغِ وَالسَّاعِدِ فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ مِثْلَهَا ... (২) ওয়ায়েল ইবনু হুজর (রাঃ) বলেন, আমি অবশ্যই রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাতের দিকে লক্ষ্য করতাম, তিনি কিভাবে ছালাত আদায় করেন। আমি তাঁর দিকে লক্ষ্য করতাম যে, তিনি ছালাতে দাঁড়াতেন অতঃপর তাকবীর দিতেন এবং কান বরাবর দুই হাত উত্তোলন করতেন। তারপর তাঁর ডান হাত বাম হাতের পাতা, কব্জি ও বাহুর উপর রাখতেন। অতঃপর যখন তিনি রুকূ করার ইচ্ছা করতেন তখন অনুরূপ দুই হাত উত্তোলন করতেন...।[9] উল্লেখ্য যে, ‘মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে’ বইটিতে উক্ত হাদীছটির পূর্ণ অর্থ করা হয়নি; বরং অর্থ গোপন করা হয়েছে।[10] তাছাড়া ভারতীয় ছাপা আবুদাঊদে অর্থ পরিবর্তন করার উদ্দেশ্যে দুইটি শব্দে ভুল হরকত দেয়া হয়েছে।[11] সুধী পাঠক! উক্ত হাদীছ প্রমাণ করে যে, রাসূল (ছাঃ) ডান হাতটি পুরো বাম হাতের উপর রাখতেন। এমতাবস্থায় হাত নাভীর নীচে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এইভাবে হাত রেখে নাভীর নীচে স্থাপন করতে চাইলে মাজা বাঁকা করে নাভীর নীচে হাত নিয়ে যেতে হবে, যা উচিৎ নয়। আমরা এবার দেখব রাসূল (ছাঃ) তাঁর দুই হাত কোথায় স্থাপন করতেন। (3) عَنْ طَاوُسٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ يَضَعُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى ثُمَّ يَشُدُّ بَيْنَهُمَا عَلَى صَدْرِهِ وَهُوَ فِي الصَّلَاةِ. (৩) ত্বাঊস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) ছালাতের মধ্যে তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন এবং উভয় হাত বুকের উপর শক্ত করে ধরে রাখতেন।[12] যরূরী জ্ঞাতব্য : ভারতীয় ছাপা আবুদাঊদে হাত বাঁধা সংক্রান্ত একটি হাদীছও উল্লেখিত হয়নি। এর কারণ সম্পূর্ণ অজানা। তবে ইমাম আবুদাঊদ নাভীর নীচে হাত বাঁধা সম্পর্কে বর্ণিত বর্ণনাগুলোকে যঈফ বলেছেন। আর বুকের উপর হাত বাঁধার হাদীছটিকে ছহীহ হিসাবে পেশ করতে চেয়েছেন। কারণ উক্ত হাদীছ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেননি। সে জন্যই হয়ত কোন হাদীছই উল্লেখ করা হয়নি।[13] উল্লেখ্য যে, উক্ত হাদীছকে অনেকে নিজস্ব গোঁড়ামী ও ব্যক্তিত্বের বলে যঈফ বলে প্রত্যাখ্যান করতে চান। মুহাদ্দিছগণের মন্তব্যের তোয়াক্কা করেন না। নিজেকে শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ বলে পরিচয় দিতে চান। অথচ আলবানী উক্ত হাদীছ উল্লেখ করে বলেন, رَوَاهُ أَبُوْ دَاوُدَ بِإِسْنَادٍ صَحِيْحٍ عَنْهُ ‘আবুদাঊদ ত্বাঊস থেকে এই হাদীছকে ছহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন’। অতঃপর তিনি অন্যের দাবী খন্ডন করে বলেন, وَهُوَ وَإِنْ كَانَ مُرْسَلاً فَهُوَ حُجَّةٌ عِنْدَ جَمِيْعِ الْعُلَمَاءِ عَلَى اخْتِلاَفِ مَذَاهِبِهِمْ فِى الْمُرْسَلِ لِأَنَّهُ صَحِيْحُ السَّنَدِ إِلَى الْمُرْسَلِ وَقَدْ جاَءَ مَوْصُوْلاً مِنْ طُرُقٍ كَمَا أَشَرْنَا إِلَيْهِ آنِفًا فَكاَنَ حُجَّةً عِنْدَ الْجَمِيْعِ. ‘ত্বাউস যদিও মুরসাল রাবী তবুও তিনি সকল মুহাদ্দিছের নিকট দলীলযোগ্য। কারণ তিনি মুরসাল হলেও সনদের জন্য ছহীহ। তাছাড়াও এই হাদীছ মারফূ‘ হিসাবে অনেকগুলো সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। যেমনটি আমি এই মাত্রই উল্লেখ করলাম। অতএব তা সকল মুহাদ্দিছের নিকট দলীলযোগ্য।[14] এছাড়াও এই হাদীছকে আলবানী ছহীহ আবুদাঊদে উল্লেখ করেছেন।[15] (৪) عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ رضي الله عنه قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ اَلنَّبِيِّ فَوَضَعَ يَدَهُ اَلْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ اَلْيُسْرَى عَلَى صَدْرِهِ. (৪) ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করেছি। তিনি তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে বুকের উপর রাখতেন।[16] উক্ত হাদীছের টীকায় শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, إِسْنَادُهُ ضَعِيْفٌ لِأَنَّ مُؤَمَّلاً وَهُوَ ابْنُ إِسْمَاعِيْلَ سَيِّئُ الْحِفْظِ لَكِنَّ الْحَدِيْثَ صَحِيْحٌ جَاءَ مِنْ طُرُقٍ أُخْرَى بِمَعْنَاهُ وَفِى الْوَضْعِ عَلَى الصَّدْرِ أَحَادِيْثُ تَشْهَدُ لَهُ. ‘এর সনদ যঈফ। কারণ তা ত্রুটিপূর্ণ। আর তিনি হলেন ইবনু ইসমাঈ। তার স্মৃতি শক্তি দুর্বল। তবে হাদীছ ছহীহ। এই হাদীছ অন্য সূত্রে একই অর্থে বর্ণিত হয়েছে। বুকের উপর হাত রাখার আরো যে হাদীছগুলো আছে, সেগুলো এর জন্য সাক্ষ্য প্রদান করে’। ইমাম শাওকানী উক্ত হাদীছ সম্পর্কে বলেন, وَ لاَشَيْءَ فِى اْلبَابِ أَصَحُّ مِنْ حَدِيْثِ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ الْمَذْكُوْرِ فِىْ صَحِيْحِ ابْنِ خُزَيْمَةَ ‘হাত বাঁধা সম্পর্কে ছহীহ ইবনু খুযায়মাতে ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) বর্ণিত হাদীছের চেয়ে বিশুদ্ধ কোন হাদীছ আর নেই’।[17] তাছাড়া একই রাবী থেকে অন্যত্র ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। (5) عَنْ قَبِيْصَةَ بْنِ هُلْبٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِىَّ يَنْصَرِفُ عَنْ يَمِيْنِهِ وَعَنْ يَسَارِهِ وَرَأَيْتُهُ قَالَ يَضَعُ هَذِهِ عَلَى صَدْرِهِ وَضَعَ يَحْيَى الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى فَوْقَ الْمِفْصَلِ. (৫) ক্বাবীছাহ বিন হুলব তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তার পিতা বলেছেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে ডান ও বামে ফিরতে দেখেছি এবং হাতকে বুকের উপর রাখার কথা বলতে শুনেছি। অতঃপর ইয়াহইয়া ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রাখেন।[18] উল্লেখ্য যে, কেউ কেউ উক্ত হাদীছকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন। কিন্তু তাদের দাবী সঠিক নয়। কারণ রাবী ক্বাবীছার ব্যাপারে কথা থাকলেও এর পক্ষে অনেক সাক্ষী রয়েছে। ফলে তা হাসান।[19] (6) عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله إِنَّا مَعْشَرَ الأَنْبِيَاءِ أُمِرْنَا أَنْ نُعَجِّلَ إِفْطَارَنَا وَأَنْ نُؤَخِّرَ سَحُوْرَنَا وَنَضَعَ أَيْمَانَنَا عَلَى شَمَائِلِنَا فِي الصَّلاَةِ. (৬) ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, নিশ্চয় আমরা নবীদের দল। আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- আমরা যেন দ্রুত ইফতার করি এবং দেরিতে সাহারী করি। আর ছালাতের মধ্যে আমাদের ডান হাত বাম হাতের উপর যেন রাখি।[20] {দলিল: [1]. ছহীহ বুখারী হা/৭৪০, ১/১০২ পৃঃ, (ইফাবা হা/৭০৪, ২য় খন্ড, পৃঃ ১০২)। ‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮৭ بَابُ وَضْعِ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى। [2]. ছহীহ বুখারী ১/১০২ পৃঃ। [3]. ছহীহ মুসলিম ১/১৭৩ পৃঃ, হা/৯২৩-এর অনুচ্ছেদ-১৫, ‘ছালাত’ অধ্যায়- باَبُ وَضْعِ يَدِهِ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى بَعْدَ تَكْبِيْرَةِ الإِحْرَامِ تَحْتَ صَدْرِهِ فَوْقَ سُرَّتِهِ وَوَضْعِهِمَا فِى السُّجُوْدِ عَلَى الأَرْضِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ। [4]. মিশকাত হা/৭৯৮ -এর টীকা দ্রঃ, ১/২৪৯ পৃঃ। [5]. বুখারী শরীফ (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, নবম সংস্করণ, জানুয়ারী ২০১২), ২য় খন্ড, পৃঃ ১০২, হা/৭০৪। [6]. সহীহ আল-বুখারী (ঢাকা : আধুনিক প্রকাশনী, বাংলা বাজার, জুন ১৯৯৭), ১ম খন্ড, পৃঃ ৩২২, হা/৬৯৬। [7]. বুখারী শরীফ ২য় খন্ড, পৃঃ ৯, হা/৫০৭; ৭ম খন্ড, পৃঃ ২৩১, হা/৪০৭৬; ছহীহ বুখারী হা/৫৩২, ১/৭৬ পৃঃ ও হা/৪৪২১। [8]. ছহীহ মুসলিম হা/১৫৯৭, ‘মসজিদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৬, উল্লেখ্য যে, ভারতীয় ছাপায় হাদীছটি নেই, ১/২৪০-২৪১; মিশকাত হা/৩৯২২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৭৪৬, ৮/২২ পৃঃ; আবাদাঊদ হা/১৩৫, ১/১৮ পৃঃ; মুসনাদে আহমাদ হা/১০০৮ -ثُمَّ قَالَ لَهُ صُبَّ فَصَبَّ عَلَيْهِ فَغَسَلَ كَفَّهُ ثَلاَثاً وَأَدْخَلَ كَفَّهُ الْيُمْنَى فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ ثَلاَثاً ثُمَّ أَدْخَلَ كَفَّيْهِ فَغَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثاً ثُمَّ أَدْخَلَ كَفَّهُ الْيُمْنَى فَغَسَلَ ذِرَاعَهُ الأَيْمَنَ ثَلاَثاً ثُمَّ غَسَلَ ذِرَاعَهُ الأَيْسَرَ ثَلاَثاً فَقَالَ هَذَا وُضُوْءُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ । [9]. নাসাঈ হা/৮৮৯, ১/১০২ পৃঃ; আবুদাঊদ হা/৭২৭, পৃঃ ১০৫; আহমাদ হা/১৮৮৯০; ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ হা/৪৮০; ইবনু হিববান হা/১৮৬০, সনদ ছহীহ। [10]. ঐ, পৃঃ ২৯০। [11]. আবুদাঊদ, পৃঃ ১০৫। [12]. আবুদাঊদ হা/৭৫৯, সনদ ছহীহ। [13]. আবুদাঊদ, পৃঃ ১২২। [14]. ইরওয়াউল গালীল ২/৭১ পৃঃ। [15]. ছহীহ আবুদাঊদ হা/৭৫৯। [16]. ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ হা/৪৭৯, ১/২৪৩ পৃঃ; বলূগুল মারাম হা/২৭৫। [17]. নায়লুল আওত্বার ৩/২৫ পৃঃ। [18]. আহমাদ হা/২২০১৭; সনদ হাসান। [19]. আলবানী, আহকামুল জানাইয, পৃঃ ১১৮ - فمثله حديثه حسن في الشواهد ولذلك قال الترمذي بعد أن خرج له من هذا الحديث أخذ الشمال باليمين حديث حسن فهذه ثلاثة أحاديث في أن السنة الوضع على الصدر ولا يشك من وقف على مجموعها في أنها صالحة للاستدلال على ذلك.। [20]. ইবনু হিববান হা/১৭৬৭; সনদ ছহীহ, ছিফাতু ছালাতিন নাবী, পৃঃ ৮৭; ইবনু ক্বাইয়িম, তাহযীব সুনানে আবী দাঊদ ১/১৩০ - حَدِيث أَبِي حُمَيْدٍ هَذَا حَدِيث صَحِيح مُتَلَقًّى بِالْقَبُولِ لَا عِلَّة لَهُ وَقَدْ أَعَلَّهُ قَوْم بِمَا بَرَّأَهُ اللَّه ।https://www.hadithbd.com/books/link/?id=1904 }
#ইমাম_তিরমিযী_ও_ইবনু_কুদামার_মন্তব্য_এবং_পর্যালোচনা :
উপরের আলোচনায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) বুকের উপর হাত বেঁধে ছালাত আদায় করতেন। কিন্তু কোন কোন মনীষী দুই ধরনের আমলের প্রতি শীথিলতা প্রদর্শন করেছেন। ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বাম হাতের উপর ডান হাত রাখার একটি হাদীছ বর্ণনা করার পর বলেন, وَرَأَى بَعْضُهُمْ أَنْ يَضَعَهُمَا فَوْقَ السُّرَّةِ وَرَأَى بَعْضُهُمْ أَنْ يَضَعَهُمَا تَحْتَ السُّرَّةِ وَكُلُّ ذَلِكَ وَاسِعٌ عِنْدَهُمْ ‘তাদের কেউ মনে করেন দুই হাত নাভীর উপর রাখবে। আবার কেউ মনে করেন নাভীর নীচে রাখবে। তাদের নিকটে উভয় আমলের ব্যাপারে প্রশস্ততা রয়েছে।[1] ইবনু কুদামাও অনুরূপ বলেছেন।[2]
পর্যালোচনা : উপরের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) বুকের উপর হাত রেখে ছালাত আদায় করেছেন। সুতরাং অন্য কারো আমল ও কথার দিকে ভ্রুক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই। তবে ইমাম তিরমিযী (রহঃ) যেমন অন্যের ব্যক্তিগত আমলের কথা বর্ণনা করেছেন, তেমনি ইবনু কুদামাও কেবল হাম্বলী মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখ করেছেন। যা পাঠকের সামনে পরিষ্কার।
{নোট: [1]. তিরমিযী হা/২৫২ -এর মন্তব্য দ্রঃ।
[2]. আল-মুগনী ১/৫৪৯ পৃঃ; মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে, পৃঃ ২৯২।
https://www.hadithbd.com/books/link/?id=1905 }
#হাত_বাঁধার_বিশেষ_পদ্ধতি_বানোয়াট :
হাত বাঁধার জন্য সমাজে যে বিশেষ পদ্ধতি চালু আছে তা কল্পিত ও উদ্ভট। যেমন- মাওলানা মুহিউদ্দ্বীন খান লিখেছেন, ‘হাত বাঁধার নিয়ম হলো পুরুষেরা বাম হাতের তালু নাভীর নিচে রাখবে এবং ডান হাতের তালু বাম হাতের তালুর পিঠের ওপর স্থাপন করে কনিষ্ঠা আঙ্গুল এবং বৃদ্ধা আঙ্গুল দ্বারা বাম হাতের কব্জি ধরবে, অনামিকা, মধ্যমা এবং শাহাদাত আঙ্গুল লম্বাভাবে বাম হাতের কব্জির ওপরে বিছানো থাকবে’।[1] তবে মাওলানা কোন প্রমাণ পেশ করেননি। মূলতঃ উক্ত পদ্ধতি বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
{ নোট: [1]. তালীমু-সালাত, পৃঃ ৩১।
https://www.hadithbd.com/books/link/?id=1906}
0 comments:
Post a Comment